ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার তীব্র কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার সময়েই বাংলাদেশকে ঘিরে নরম সুরে কথা বলল ইসলামাবাদ। ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার প্রেক্ষাপটে যখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে, তখন বাংলাদেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে পাশে পেতে চাচ্ছে পাকিস্তান।
শুক্রবার ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ স্পষ্ট ভাষায় জানান, তার দেশ ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ককে আরও গভীর করতে চায়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করতে আগ্রহী।”
এই মন্তব্যটি এসেছে এমন সময়ে, যখন বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়েছে, আর সেই সুযোগেই পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছে। আসিফ আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পাকিস্তানের কাছে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
সম্প্রতি প্রায় দেড় দশক পর দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার-এর ঢাকা সফরও নির্ধারিত ছিল, যদিও কাশ্মীর হামলার জেরে সেই সফর আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিকে, কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। সীমান্তে গুলি বিনিময় বেড়েছে, বাতিল হয়েছে একাধিক ভিসা, স্থগিত হয়েছে সিন্ধু চুক্তি। ইসলামাবাদও দিল্লির সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতিও প্রত্যাহার করেছে।
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর এই কূটনৈতিক বার্তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এটি শুধু সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার নতুন জিও-পলিটিক্যাল সমীকরণেরও ইঙ্গিত।