অনৈতিক কাজে হোটেল থেকে গ্রেপ্তার, অতীত পেছনে ফেলে আজ জনপ্রিয় অভিনেত্রী

Uncategorized

গতবছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ত্রিভুবন মিশরা : সিএ টপার’ সিরিজে নজর কেড়েছেন অভিনেত্রী শ্বেতা বসু প্রসাদ। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত পঙ্কজ ত্রিপাঠির ক্রিমিনাল জাষ্টিসের নতুন সিজনেও দেখা গেছে তাকে। সেই অভিনেত্রী একসময় কিনা হোটেলে অনৈতিক কাজের সময় ধরা পড়েছিলেন! এমন তিক্ত এক অতীত বয়ে বেড়াচ্ছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় মুখ শ্বেতা বসু প্রসাদ।

শোবিজ অঙ্গনে শিশুশিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন শ্বেতা।

শুরুতেই গগনচুম্বী সাফল্য। ২০০২ সালে ‘মাকড়ি’ চলচ্চিত্রে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু সেই সাফল্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বরং কিছুটা অন্ধকারেই চলে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী।

শেষ পর্যন্ত তাঁর নাম জড়িয়ে গিয়েছিল দেহব্যবসার সঙ্গেও। সবমিলিয়ে অভিনেত্রীর নাম বললেই যেমন মাথায় আসে সাবলীল অভিনয়ের কথা, তেমনই মনে পড়ে যায় বিতর্কের কথাও।

২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট, হায়দরাবাদের বানজারা হিলসের একটি হোটেল থেকে শ্বেতা বসু প্রসাদকে দেহব্যবসার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঘটনাটি ভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

পুলিশের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, শ্বেতা বসু প্রসাদ অর্থের বিনিময়ে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন। উদ্ধার করার পর, তাঁকে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

ঘটনার পর শ্বেতা গণমাধ্যমে জানান, তাঁকে জোর করে এই কাজে ফাঁসানো হয়েছিল। তিনি দারিদ্র্যের কারণে এই পেশায় আসতে বাধ্য হননি, বরং ভুল বুঝিয়ে এই কাজে জড়ানো হয়েছিল তাঁকে। তবে অভিনেত্রীর নিজের কথাতেই বারবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

একবার সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি নন, বলিউডের অনেক নায়িকাকেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে এই ধরনের কাজ করতে হয়। কেরিয়ার বাঁচাতে বাধ্য হয়ে এসব করেন তাঁরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, খদ্দের সেজে দালাল বালুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে শ্বেতার খোঁজ মেলে। জানা যায়, যুবতী অভিনেত্রীর যৌনসঙ্গ পেতে হলে খরচ করতে হবে মোটা টাকা। গোপন ক্যামেরায় তোলা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, খদ্দেরের থেকে এই বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন শ্বেতা। অগ্রিম হিসেবে নেওয়া হয়েছিল এক লক্ষ টাকা। এর মধ্যে বালুর ভাগে ছিল ১৫ হাজার টাকা। বাকি অর্থ অভিনেত্রীর জিম্মায় থাকে।

যথা সময়ে খদ্দের সেজে হোটেলের ঘরে উপস্থিত হয় পুলিশ। শ্বেতা এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার এরামঞ্জিল আদালতে তাঁকে হাজির করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে অভিনেত্রীকে এক সরকারি হোমে রাখা হয়েছে। বালুকে রাখা হয়েছে চার্লাপল্লি জেলে।

বাঙালি মা এবং বিহারি বাবার মেয়ে শ্বেতার জন্ম জামশেদপুরে। পরে তাঁর পরিবার মুম্বাইয়ে এসে থিতু হয়। শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি তীব্র ঝোঁক ছিল শ্বেতার। মাত্র ১১ বছর বয়সে হিন্দি ছবি ‘মাকড়ি’তে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। চুন্নি ও মুন্নির দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৫ সালে ‘ইকবাল’ ও ২০০৬ সালে ‘ডরনা জরুরি হ্যায়’ ছবির সুবাদে বলিউডের স্বীকৃতি পান শ্বেতা। পাশাপাশি টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেন। তাঁকে দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘এক নদীর গল্প’ বাংলা ছবিতে। এরপর তেলুগু ছবিতে ডাক পেয়ে হায়দাবাদ পাড়ি দেন শ্বেতা। কিন্তু অভিনয় জীবনের অন্তরালে কবে যে তিনি দেহ বিপণনের দিকে ঝোঁকেন, তা নিয়ে পরিচিতরা সবাই ধন্দে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *