হঠাৎ করে স্কুল শিক্ষক বাবার বুকে ব্যথা অনুভব হলে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করান ছেলে। ডাক্তারের অবহেলায় বাবার মৃত্যু হলে নিকটবর্তী থানায় তা জানান, এরপর থানা থেকে পুলিশ এলেও তার অভিযোগের কথা না শুনে আর ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন না নিয়ে উল্টো মারধর করেন শোকাহত ছেলেকেই। ঘটনাটি ভারতের গুজরাটের। যে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে পুরো ভারতজুড়ে।
ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে জানা যায়, গুজরাটের পাটডি শহরের একটি সরকারি হাসপাতালে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি করা হয় স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রাজেন্দ্রভাই যাদবকে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে কোনো ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন না আর ডাক্তারের অবহেলার ফলে চিকিৎসা ছাড়াই তার মৃত্যু ঘটে।
এরপর, নিহতের ছেলে রমেশ যাদব যখন বাবার মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তখন সেখানে আসে স্থানীয় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের মোতাবেক, শান্তভাবে প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ আচমকাই রমেশের ওপর চড়াও হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় রমেশ পুলিশের দিকে হাত বাড়িয়ে শান্তি চাইছেন, আর পুলিশ তাঁকে ঘুষি, চড় এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করছে।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। স্বয়ং ভারতীয়রাই ধুয়ে দিচ্ছেন সেদেশের পুলিশ বাহিনীকে, এমন অমানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য। প্রিয়াঙ্কা ঠাকুর নামের এক ভারতীয় ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে হিন্দিতে লিখেছেন, যার বাংলা অর্থ দ্বারায়, ‘এই হলো ভারতীয় পুলিশের বর্তমান অবস্থা, বাবা মারা গেল, আর ছেলেকেই মারলো পুলিশ, এ কেমন বিচার? এর সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।’
আশিক কুমার নামের আরেক ভারতীয় ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘গরিব মানুষের জীবন, ভারতীয় পুলিশের হাতে যেন আরেকটা সংখ্যা মাত্র। চিকিৎসা নেই, জবাবদিহিতা নেই, কবে বদলাবে এই ব্যবস্থা? মানুষ হলে এমন করত না এসব নামধারী পুলিশগুলো। এক একটা যেনো মানুষরূপী ভিন্ন কিছু। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।’
এই ঘটনায় ভারতের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা ও পুলিশের আচরণ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে সমগ্র ভারতজুড়ে। চিকিৎসা অবহেলা ও প্রশাসনিক বর্বরতা নিয়ে ইতিমধ্যে গর্জে উঠেছে সেদেশের সাধারণ মানুষ। হচ্ছে আন্দোলন আর প্রতিবাদও। এই ঘটনায় ভারতের কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গোদি ধরেও টানাটানি করছে সাধারণ ভারতীয়রা।