‘ভেসে যাচ্ছি’, মৃত্যুর আগে হৃদয়বিদারক বার্তা কলেজছাত্রীর

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের গুয়াডালুপে নদীতে গত ৪ জুলাই প্রবল বর্ষণের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। তখন বন্ধুদের সঙ্গে নদীর ধারের এক বাড়িতে অবস্থান করছিলেন ২১ বছরের তরুণী জয়েস ক্যাথরিন বাদন। সে সময় ভেসে যাওয়া তরুণীর মরদেহ শেষ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।

স্থানীয় সময় রাত ৪টার দিকে সেই বাড়িটি নদীর প্রবল স্রোতে ধসে পড়ে বলে জানায় সংবাদমাধ্যমগুলো। তরুণীর বাবা টাই বাদন সিএনএনকে বলেন, জয়েস তার কলেজ বন্ধুদের সঙ্গে বাড়িটিতে ছিল। তখনই নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যায়। সোমবার (৭ জুলাই) তিনি নিশ্চিত করেন, মেয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে।

জয়েসের মা কেলি বাদন ফেসবুকে আবেগঘন এক বার্তায় লেখেন, আজ সকালে ঈশ্বর আমাদের পথ দেখিয়েছেন! আমরা আমাদের প্রিয় মেয়েকে খুঁজে পেয়েছি, যে ২১ বছর আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে ছিল। এখন তার তিন বন্ধুর সন্ধানে প্রার্থনা করছি। সবার দোয়া ও সহানুভূতির জন্য কৃতজ্ঞ। ঈশ্বর মহান!

বন্যার সময় জয়েস তার পরিবারের কাছে শেষ যে বার্তাটি পাঠিয়েছিল, তা ছিল হৃদয়বিদারক। স্বেচ্ছাসেবীদের একদল প্রধান লুই ডেপে জানান, “তার ফোনে শেষ মেসেজ ছিল—‘আমরা ভেসে যাচ্ছি।’ এরপরই ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

জয়েস ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন তার তিন বন্ধু—এলা কাহিল, আইডান হার্টফিল্ড এবং রিস মানচাকা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, বাড়িটি ছিল আইডানের বাবার মালিকানাধীন। বন্যার সময় আইডান তার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। বাবাকে তিনি জানান, ‘এলাকে সাহায্য করতে হবে, রিসও ভেসে গেছে।’ এরপরই ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

জয়েসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও রুমমেটের মা টিনা হ্যাম্বলি নিজের হাতে কায়াকের বৈঠা দিয়ে গাছপালা ও ভাঙা কাঠের স্তূপে অনুসন্ধান চালান। তিনি বলেন, আমরা সাতটি টিমে বিভক্ত হয়ে প্রতিটি এক মাইল করে নদীর ধারে খুঁজছি—যেন চারজনের কাউকে পাওয়া যায়।

টেক্সাসের ভয়াবহ এই বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১০৪ জন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ৪১ জন। উদ্ধারকাজ চললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিখোঁজদের জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে।

সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *