সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং – গুলশান থেকে গ্রেপ্তার ওবায়দুল কাদের..’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে জানায়, পলাতক ওবায়দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ‘প্রিয়বাংলা২৪’ নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি কথিত প্রতিবেদনের বরাতে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের ওই দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ওয়েবসাইটের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘প্রিয়বাংলা২৪’ নামের ওয়েবসাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়।
‘প্রিয়বাংলা২৪’ নামের এই ওয়েবসাইটে ‘গুলশান থেকে গ্রেপ্তারফতার ওবায়দুল কাদেরের..’ শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ গত ৩১ মে প্রকাশ করা হয়েছে।
কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, গুলশান থেকে ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত ছেলে’ গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর বাড্ডা থানার দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পালিত ছেলে বলে পরিচয় দেওয়া এক যুবককে।
তার নাম আসাদুজ্জামান হিরু। পুলিশের বরাতে বলা হয়, ওবায়দুল কাদেরের পালিত ছেলে বলে পরিচয়দানকারী হিরুকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান থানা পুলিশের একটি স্পেশাল টিম গ্রেপ্তার করে। ৫ আগস্ট পরে বাড্ডা থানায় হওয়া একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসাদুজ্জামান হিরু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অর্থ যোগানদাতা ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
ওবায়দুল কাদেরের ছত্রছায়ায় অর্থ লোপাট করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। জনরোষে ওইদিনই ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর একে একে মামলা হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা পালিয়ে কিংবা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর লাপাত্তা ছিলেন ওবায়দুল কাদেরও।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘সেকেন্ড ম্যান’ হিসেবে পরিচিত ওবায়দুল কাদের দেশে নাকি বিদেশে সেটা নিয়ে ৫ আগস্টের পর থেকেই আলোচনা ছিল। অবশেষে তার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা অনেকটা কেটে যায়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও তিন মাস তিনি দেশেই আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৮ নভেম্বর সাবেক এই মন্ত্রী দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদটি পর্যালোচনা করে এতে ওবায়দুল কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
ওবায়দুল কাদেরের মতো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে সে বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও ওই দাবির সত্যতা মেলেনি।
সুতরাং, ওবায়দুল কাদের গ্রেপ্তার হয়েছেন শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সূত্র: কালের কণ্ঠ