ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে বিভিন্ন সংঘঠন। এই ঘটনায় এরই মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেশজুড়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগা থেকে সৃষ্ট বিতণ্ডার জেরে।
বুধবার (১৪ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত পৌনে ১২টার দিকে সাম্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে পুরাতন ফোয়ারার কাছে পৌঁছালে অজ্ঞাত ১০/১২ জন দুষ্কৃতকারীরা তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দিয়ে সাম্যর মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিষয় নিয়ে সাম্যদের সাথে দুষ্কৃতকারীদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তর্ক বির্তকের এক পর্যায়ে দুষ্কৃতকারীরা সাম্য ও তার বন্ধুদের ইট দিয়ে আঘাত করে আহত করে। এক পর্যায়ে একজন দুষ্কৃতকারী সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের উরুর পেছন দিকে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এতে সাম্য রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ সময় দুষ্কৃতকারীরা সাম্য ও তার বন্ধুদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরবর্তীতে বন্ধুরা উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় সাম্যকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে বুধবার সকালে ঢাকার শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাম্য হত্যার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। তারা হলেন- মো. তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও মো. পলাশ সরদার (৩০)।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর সাম্যর বড় ভাই এস.এ.এম শরিফুল আলমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহবাগ থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার পর থানা পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।