স্বামী মর্গে, মেয়ে আইসিইউতে, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

সারাদেশ

সন্তানকে স্কুলে নেওয়ার পথে যাত্রীবাহী বাস চাপায় বাবা শান্ত, মা ও সন্তান উম্মে তুরাইয়া আহত হন। এ দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ের দুই পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন শান্তর স্ত্রী। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেক (রামেক) হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৯ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মারা যান শান্ত।

এর আগে সোমবার (১৯ মে) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী বাঘা উপজেলার বানিয়াপাড়ায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় একই পরিবারের তিনজন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নিহত শান্তর ভাতিজি জামায় ফারুক হোসেন বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পরে জরুরী ভিত্তিতে তাদের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপরে বাবা-মেয়ে দুজনকেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ সেন্টারে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। আর শান্তর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। বাবা-মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এয়ার অ্যম্বুলেন্সও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু শান্ত মারা যাওয়ার খবরে এয়ার অ্যম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।

ফারুক হোসেন আরও বলেন, শান্তর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। তার মেয়ের রাজশাহী হাসপাতালেই চিকিৎসা চলবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। প্রাথমিক অবস্থায় তার তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে স্বামীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি। তার শরীরের ডান সাইট অবস হয়ে আছে। তার চিকিৎসা চলছে। এছাড়া মেয়ে উম্মে তুরাইয়া অবস্থা মোটামোটি, ভালো বলা যাবে না। শান্তর মরদেহ গ্রামের বাড়ি নাটোরের লালপুরে নিয়ে যাওয়া প্রস্তুতি চলছে। আজ এক হৃদয় বিদায়ক ঘটনা ঘটলো- স্বামী মর্গে, মেয়ে আইসিউিতে, যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা মা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে শান্ত তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলযোগে মেয়ের স্কুলে যাচ্ছিল। পথে বানিয়াপাড়ায় পৌঁছালে ঢাকাগামী সুপার সনি নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কা লাগে। এসময় বাবা-মেয়ে মোটরসাইকেলের নিচে চাপা পড়ে। এসময় যাত্রীবাহী বাসের চাকা তাদের মোটরসাইকেলের ওপর দিয়ে গেলে দুমড়েমুচরে যায়। এতে বাবা ও মেয়ের শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে এই ঘটনায় শান্তর স্ত্রী আহত হয়েছেন। বাবা-মেয়েকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পরে বাসের চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেলেও বাসটি পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে বাঘা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান বলেন, শান্তর মৃত্যুর কথা শুনেছি। এই ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা হবে। বাসের চালক ও সহকারীরা পালিয়েছে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *