স্বামীকে ‘ভাই’ সম্বোধন করলে কি তালাক হয়ে যাবে!

লাইফ স্টাইল

আবেগ, ভালোবাসা কিংবা পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার কারণে অনেক সময় স্ত্রীরা স্বামীকে ‘ভাই’ বা ‘ভাইয়া’ বলে ডাকেন। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এই ধরনের সম্বোধনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এর সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞাও পাওয়া যায়।

হাদিসে বর্ণিত আছে, একবার এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ‘বোন’ বলে সম্বোধন করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার এ বক্তব্যকে অপছন্দ করেন এবং এমন সম্বোধন করতে নিষেধ করেন। (সুনানে আবু দাউদ: ২২০৪)

ফিকাহ শাস্ত্রের বইগুলোতেও এ ধরনের সম্বোধনকে মাকরুহ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, এটি পরিহারযোগ্য এবং ইসলামী আদবের পরিপন্থী। তবে কেউ যদি এমন বলে ফেলেন, তাহলে তাতে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হয় না বা বিয়ে ভেঙে যায় না। (ফাতহুল কাদির ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০)

এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, হাদিসে স্বামীকে ভাই বা স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও এতে সম্পর্ক ছিন্ন হয় না, তবে আদব অনুযায়ী এমন শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো।

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী ও স্ত্রীর একে অপরকে এমনভাবে সম্বোধন করা উচিত, যাতে সম্মান, ভালোবাসা ও পারস্পরিক মর্যাদা বজায় থাকে। কেউ চাইলে পরস্পরকে সন্তানের নামের সঙ্গে যুক্ত করে যেমন ‘আবু রায়হান’ বা ‘উম্মে আয়েশা’ ইত্যাদি বলে ডাকতে পারেন। নাম ধরে ডাকলেও তা যদি সমাজে অসম্মানজনক মনে না হয়, তাহলে তাও বৈধ।

তবে কোনো সংস্কৃতিতে স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক মনে করা হলে, স্ত্রীকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। এমন কোনো সম্মানসূচক উপাধি বা ডাকনাম ব্যবহার করা উচিত, যা উভয়ের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখে।

একটি প্রাচীন বর্ণনায়ও পাওয়া যায়, হযরত ইবরাহিম (আ.) যখন তার স্ত্রী হাজেরা ও পুত্র ইসমাইলকে জনমানবহীন স্থানে রেখে যাচ্ছিলেন, তখন হাজেরা (আ.) তাকে নাম ধরে ডেকেছিলেন। (সহিহ বুখারি: ৩৩৬৫)

সব মিলিয়ে, ইসলাম এমন কোনো শব্দ ব্যবহারের অনুমোদন দেয় না, যা সম্পর্কের প্রকৃতি ও মর্যাদাকে ব্যাহত করে। তাই আবেগবশত হলেও স্বামীকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন থেকে বিরত থাকা শ্রেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *