স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের কাছে ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে টেনেহিঁচড়ে নিজ দোকান থেকে বের করে হত্যা করা হয় শত শত জনতার সামনে। এ নৃশংস ঘটনার সময় প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে খুনিদের পায়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন সোহাগের কর্মচারী মো. ইসমাইল ও মো. বাবুল। বারবার অনুনয় করলেও তাতে মন গলেনি হামলাকারীদের। তারা তাকে পিটিয়ে, কুপিয়ে এবং মাথা থেঁতলে নিশ্চিত করে তার মৃত্যু। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূলহোতা মহিন এবং চকবাজার থানার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন চকবাজার থানা যুবদলের সদস্য সচিব পদপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান মহিন এবং একই থানার ছাত্রদলের সদস্য সচিব অপু দাস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্ধশতাধিক লোক এ হামলায় অংশ নেয়। এর মধ্যে রিয়াদ, সজীব, নান্নু, লম্বা মনির ও ছোট মনির—পাঁচজন মিলে সোহাগের মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। তারা সবাই মহিনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মহিন-অপু সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরেই মিটফোর্ড এলাকায় চাঁদাবাজি ও ব্যবসা দখলের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নেমে আসে ভয়াবহ হামলা। প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ভয়ভীতি দেখানো ছিল নিয়মিত ঘটনা।
সোহাগকে হত্যার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে থাকা রাস্তায় অর্ধবিবস্ত্র হয়ে শুয়ে পড়ে আছে সোহাগ। তখন তার শুধু নিঃশ্বাসটুকু চলছিল। এ সময় রাস্তা থেকে একটি বড় কংক্রিটের অংশ হাতে তুলে নেয় হালকা আকাশি রঙের শার্ট এবং জিন্সের প্যান্ট পরিহিত রিয়াদ। মাথার ওপরে কংক্রিটের অংশ তুলে সজোরে কোমর আর বুকের মাঝখানে আঘাত করে সে। এ সময় সোহাগ দুই হাত আর দুই পা ছড়িয়ে দিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। এরপর একদম বুক বরাবর আবার আঘাত করে। তখন গোল গলার টি-শার্ট আর গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহিত সজীব একপাশ থেকে হেঁটে এসে আরেকটা বড় কংক্রিটের অংশ মাথায় তুলে একদম মুখের মধ্যে আঘাত করে। এরপর আরেকটি ইট নিয়ে এসে মাথায় আঘাত করে ছোট মনির, পাশ থেকে আবার মাথায় আঘাত করে লম্বা মনির, আর তাদের ইট এগিয়ে দেয় নান্নু। এভাবে বারবার মারতে মারতে মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় সোহাগের। আর এই পুরো হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন মহিন এবং অপু দাস। মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা ছোট মনির মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী, নান্নু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এবং বড় মনির, রিয়াদ ও সজীব যুবদল নেতা মহিনের কর্মী।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই চকবাজার এলাকায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন মহিন এবং অপু দাস। বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত দখল করে দোকান থেকে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে হুমকি দিয়ে চাঁদা তোলা ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ। যারাই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানাত তাদেরই মারধর করা হতো এবং দোকান বন্ধ করে দেওয়া হতো। সোহাগ এক সময় মহিনের সঙ্গে চলাফেরা করলেও এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগের কাছে। সেটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল মহিন, অপু, চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সারোয়ার হোসেন টিটু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রজ্জব আলী পিন্টুসহ মিটফোর্ড হাসপাতালের একটি চক্র। তারা ওই অবৈধ বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এর জেরেই দ্বন্দ্ব এবং ঘটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
এক ব্যবসায়ী জানান, সোহাগকে হত্যার কয়েকদিন আগেও এক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ীকে চাঁদার জন্য সবার সামনে বেধড়ক মারধর করে মহিন এবং অপু দাস। এ ছাড়া গত মার্চ মাসে রজ্জব আলী পিন্টু, রবিন এবং আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় বিএনপি নেতা ইসহাক আলী সরকারের নেতৃত্বে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর চাঁদার জন্য হামলা করে। এ ঘটনায় চকবাজার থানায় তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলাও হয়।
সোহাগের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক দলের কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী, আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী মঞ্জুয়ারা বেগম কালবেলাকে বলেন, পরিকল্পিভাবে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। আমরা চাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাই যেন দ্রুত গ্রেপ্তার হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এজাহার নামীয় আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় আসামি তারেক রহমান রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া র্যাব এজাহারভুক্ত আসামি মনির ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে হাসানকে ৫ দিনের জন্য এবং রবিনকে দুদিনের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
ডিসি তালেবুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিক্ষোভ-প্রতিবাদ: হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় এ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে সোহাগ খুন’, ‘যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, সোহাগ হত্যার কারণে আজকে যেমন ছাত্র বন্ধুরা প্রতিবাদ করছে, আওয়ামী লীগের সময়েও ঠিক এভাবেই প্রতিবাদ করত। বিএনপি নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
সোহাগ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাবি ছাত্রদল। গতকাল রাত ১০টার দিকে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডাস চত্বর পার্শ্ব রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাবি শাখা ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল এই হত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যদি বিচার নিশ্চিত না করা হয়, ছাত্রদল এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’
একই ঘটনায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণসংহতি আন্দোলনের বিবৃতি: নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণসংহতি আন্দোলন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে যেভাবে পাথর দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নির্মম ও ভয়ংকর।
একই দিন বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, সোহাগ হত্যার ভিডিও কতটা ভয়াবহ, নির্মম ও নিষ্ঠুর, তা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়।
এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে মন্তব্য করে দুই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষমতায় গিয়ে কী করবে, ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী সোহাগকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার মধ্য দিয়ে তা স্পষ্ট হয়েছে।
বিএনপির বিবৃতি: পুরান ঢাকার ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনাটি দেশের মানুষের বিবেককে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত এই পৈশাচিক ও ন্যক্কারজনক ঘটনাটির দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে আরও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, ওই ঘটনাটির অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
গতকাল রাতে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল নিহত ব্যক্তির রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডকে রোমহর্ষক ও নৃশংসতম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনো দুষ্কৃতকারীর অপরাধের দায় দল নেবে না। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঘটনার ভিডিও ফুটেজে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের যাদের দেখা গেছে, তাদের এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি এবি পার্টির : ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। গতকাল এক বিবৃতিতে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। অথচ কিছু রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে একদল দুর্বৃত্ত সারা দেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে আবারও গণঅভ্যুত্থান-পূর্ববর্তী পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।’ তারা অবিলম্বে সোহাগ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের চারজন সংগঠন থেকে বহিষ্কার: গতকাল সন্ধ্যায় পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল সোহাগ হত্যার ঘটনায় চারজনকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে। তারা হলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক জলবায়ুবিষয়ক সহসম্পাদক রজ্জব আলী (পিন্টু) ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবাহ করিম (লাকি), চকবাজার থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব অপু দাস ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু।
যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব সংগঠন নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত নেতা অপু দাসের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।