পটুয়াখালীর এক দরিদ্র কৃষক সোহাগ মৃধা ছয় বছর ধরে নিজের হাতে লালন-পালন করেছেন একটি ষাঁড়—যার নাম দিয়েছেন ‘কালো মানিক’। তার একটিই স্বপ্ন ছিল—এই ষাঁড়টি ঈদুল আজহায় উৎসর্গ করবেন তার প্রিয় নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে।
সেই স্বপ্ন নিয়েই এবার রাজধানীতে পাড়ি জমান সোহাগ। একটি মিনি ট্রাকে সুসজ্জিত করে তিনি ঢাকায় নিয়ে আসেন বিশাল আকৃতির কালো মানিককে—যার ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। গলায় ছিল বিএনপির প্রতীকের মালা, গায়ে রঙিন কাপড়। গ্রামের মানুষজনও এতে উচ্ছ্বসিত ছিলেন; তৈরি হয়েছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
তবে খালেদা জিয়া ষাঁড়টি গ্রহণ করেননি। পরিবর্তে, তিনি সোহাগকে নিজ এলাকায় ফিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের কোরবানি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ।
তিনি বলেন,
“খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সোহাগ মৃধা ও তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে তাদের জন্য পাঠানো হয়েছে বিশেষ ঈদ উপহার।”
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে সোহাগ বলেন,
“দেশনেত্রী নিজ হাতে আপ্যায়ন করেছেন আমাকে, দিয়েছেন ঈদের উপহার। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
সোহাগ জানান, ২০১৮ সালের শেষের দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কিনেছিলেন তিনি। গাভিটি একটি বাছুর প্রসব করে, আর সেটিই আজকের ‘কালো মানিক’। অক্লান্ত পরিশ্রম, আদর আর ভালোবাসায় বড় করে তুলেছেন ষাঁড়টিকে। স্থানীয় বাজারে এর মূল্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠলেও সোহাগ কখনো বিক্রির কথা ভাবেননি। তার ভাষায়,
“এই ষাঁড় বিক্রির জন্য না—এটা শুধু নেত্রীর জন্য।”
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন,
“সোহাগ আমাদের দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। তার এই ভালোবাসা এবং ত্যাগ বিরল। আমরা গর্বিত, এমন একজন কর্মী আমাদের দলে আছেন।”
সোহাগ আরও বলেন,
“২০২৩ সালে দেখেছিলাম, এক কৃষক গরু উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তখন থেকেই আমার মনে আশা জেগেছিল, একদিন আমি আমার নেত্রী খালেদা জিয়াকে একটি গরু উপহার দেব। আজ সেই সুযোগ এসেছে। তিনি গরুটি গ্রহণ করুক বা না করুক, আমি শান্তি পেয়েছি। চেষ্টা করেছি—এটাই আমার জীবনের বড় পাওয়া।”