ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর একটি অভ্যাস। এটি যেমন শারীরিক ক্ষতি ডেকে আনে, তেমনি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও একটি গুনাহর কাজ। ধূমপানের ফলে ব্যক্তি নিজের অর্থ অপচয় করে এবং নিজেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতির পথে নিয়ে যায়।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা নিজের হাতে নিজেদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না” (সুরা বাকারা: ১৯৫)। এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, ধ্বংসাত্মক কোনো কাজ ইসলাম অনুমোদন করে না।
আল্লাহ আরও বলেন, রাসুল (সা.) মানুষের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করেছেন এবং অপবিত্র ও ক্ষতিকর বস্তু হারাম করেছেন (সুরা আরাফ: ১৫৭)। সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্য নিঃসন্দেহে মানবদেহ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
ধূমপানের পর মুখে দুর্গন্ধ থেকে যায়, যা আশপাশের মানুষের জন্য কষ্টদায়ক হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়” (সহিহ বুখারি)।
একটি সহিহ হাদিসে নবী (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি পেঁয়াজ, রসুন কিংবা তীব্র গন্ধযুক্ত কিছু খায়, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে, কারণ ফেরেশতারা মানুষ যেভাবে কষ্ট পায়, তারাও কষ্ট পায়” (সহিহ মুসলিম)। অথচ বিড়ি-সিগারেটের গন্ধ পেঁয়াজ-রসুনের চেয়েও বেশি তীব্র।
তাই ধূমপান করে সরাসরি মসজিদে যাওয়া কিংবা নামাজে অংশ নেওয়া মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। এতে নামাজের ফজিলত কমে যেতে পারে, তবে তা বাতিল হয়ে যাবে না।
তবে এই অভ্যাসের কারণে নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকা মোটেও সঠিক নয়। বরং ধূমপান ছাড়ার আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং নামাজের আগে মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।
সারকথা হলো, ধূমপান ইসলামে নিরুৎসাহিত ও গুনাহর কাজ। তবে ধূমপায়ী হলে নামাজ ছাড়তে হবে না, বরং যথাসাধ্য পরিষ্কার হয়ে নামাজে অংশ নিতে হবে।