স্বর্ণের বাজারে চলছে চরম উত্তেজনা। আন্তর্জাতিক সংকট, রাজনৈতিক টানাপোড়েন আর বাজারের অস্থিরতার মাঝে দুবাইয়ের স্বর্ণদর যেন রীতিমতো ওঠানামার খেলায় মেতেছে। কখনও নতুন রেকর্ড, কখনও হঠাৎ দরপতন এই দোলাচলে যেখানে অধিকাংশ ক্রেতা দামের অপেক্ষায়, সেখানে অনেকেই রেকর্ড দামে কিনে নিচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত স্বর্ণ। এবারও ঘটেছে তেমনই এক চমক। দাম কমেছে প্রায় ৫ দিরহাম, তবুও থামেনি ক্রেতার ভিড়। খবর গালফ নিউজ
দুবাইয়ের স্বর্ণবাজারে মঙ্গলবার (১৭ জুন) হঠাৎ করেই দামে পতন ঘটেছে। ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি গ্রামে ৪.৭৫ দিরহাম কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭৮.২৫ দিরহামে। তবে এতেও সাধারণ ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির খুব একটা সুযোগ নেই, কারণ মাত্র কয়েক দিন আগেই এই স্বর্ণের দর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৩৮৩ দিরহাম ছাড়িয়ে যায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাম যদি ৩৭০ দিরহামের নিচে নামে, তাহলে তা কিছুটা ‘ক্রেতা-সুলভ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এর বেশি হলে অনেকেই কেনা থেকে বিরত থাকেন। তবুও, গত শুক্রবারের রেকর্ড দামে অনেকেই স্বর্ণ কিনেছেন, যা বিস্ময়কর।
এক জুয়েলারি দোকানদার বলেন, ‘রেকর্ড দামে হলেও আমরা বেশ কিছু বিক্রি করেছি। এমনকি কেউ কেউ দাম আরও বাড়বে ভেবে আগেভাগেই কিনে নিচ্ছেন।’
স্বর্ণ কেনায় সবচেয়ে বড় চমক ছিল শুক্রবার, যখন ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দর এক লাফে বেড়ে যায়। তখন দুবাইয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম পৌঁছে যায় ৩৮৩ দিরহামে, যা পূর্বের সর্বোচ্চ ছিল ৩৮১.৭৫ দিরহাম।
তবে অনেকেই অপেক্ষা না করে রেকর্ড দামেই স্বর্ণ কিনেছেন। দুবাই গোল্ড সুকের এক দোকানে এক ভারতীয় ক্রেতা ৪০ গ্রাম স্বর্ণ কিনেছেন প্রায় ২০ হাজার দিরহামে। বিক্রেতা জানান, ‘আমরা বলেছিলাম হয়তো সোমবার দাম কমবে, কিন্তু তিনি বিয়ের জন্য স্বর্ণ কিনতেই চাচ্ছিলেন, তাই আর দেরি করেননি।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরের শেষ নাগাদ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৪০০-৪১০ দিরহামে পৌঁছাতে পারে। অনেকেই তাই আগেভাগে কিনে রাখছেন।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দরও কিছুটা কমেছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৪০০ ডলারের নিচে রয়েছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায় এই পতন ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে একাধিক বিক্রেতার মতে, দাম যতই বাড়ুক বা কমুক, দুবাইয়ে স্বর্ণের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কখনোই ম্লান হয় না।