৩ লাশ টুকরো টুকরো করা শিমুল ধরা পড়লেন যেভাবে, প্রকাশ্যে এলো গা শিউরে ওঠার তথ্য

সারাদেশ

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে গেল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে একটি অটোরিকশা থেকে প্লাস্টিকের বস্তাসহ নামেন এক যাত্রী। রিকশা চলে যাওয়া পরই বস্তা রেখে তিনিও উধাও হয়ে যান। এরপর বস্তাটি স্থানীয়দের নজরে আসলে ট্রিপল নাইনে কল দেন এলাকাবাসী। পুলিশ সেখানে গিয়ে বস্তা খুলতেই বেরিয়ে আসে দুই হাত, দুই পা আর মাথাবিহীন এক নারীর দেহাবশেষ।

এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে উঠেপড়ে লাগে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে। এরপরই বেরিয়ে আসে গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লাশ ভর্তি সেই বস্তার ভেতরই পাওয়া যায় একটি ফোন রিচার্জ কার্ড। যে কার্ডের সূত্র ধরে পরিচয় মেলে রিচার্জ হওয়া সেই ফোনের মালিকের। তার নাম বিথী। বের করা হয় তার স্বজনদের।

তারা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরেই বিথী আর তার ছেলে নিখোঁজ। বিথীর ফোনের কল রেকর্ড বের করে পুলিশ। দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি কথা হয়েছে মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে, যিনি বিথীর সাবেক স্বামী। আটক করা হয় তাকে। এরপরই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।

শিমুল পুলিশকে জানান, সাত বছর আগে বিথীকে বিয়ে করেন তিনি। ৩ বছর পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর আরেকটি বিয়ে করে সংসার শুরু করেন বিথী। সেই সংসারেরই ছেলে রাফসান। শিমুলও দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তবে সম্প্রতি আবার বিথীর সঙ্গে একসঙ্গে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগ এলাকায় একই বাসায় থাকতে শুরু করেন শিমুল। বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়ায় সেই বাসাতেই শুক্রবার শ্বাসরোধ করে বিথীকে হত্যা করেন শিমুল। ঘটনা দেখে ফেলায় ৪ বছরের শিশু রাফসানকে গলা চেপে মেরে ফেলেন তিনি। মেঝেতে দুজনের লাশ দেখে ফেলায় ভাড়াটিয়া নুপুর নামের এক তরুণীকেও হত্যা করে শিমুল। এরপর বাথরুমে ৩টি লাশই টুকরা করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন শিমুল।

পুলিশ জানায়, বিথীর লাশের ৮ থেকে ১০ টুকরা এবং নুপুরের হাত পা ও মাথা একই বস্তায় ভরে ফেলে দিয়েছে বুড়িগঙ্গায়। আরও উদ্ধার হওয়া টুকরাগুলো নুপুর নামের ওই তরুণীর লাশের কিছু অংশ। অপরদিকে বিথীর ৪ বছরের সন্তান রাফসানের লাশ ৬ টুকরা করে বস্তাবন্দি করে ফেলে রেখেছে কেরানীগঞ্জ বেয়ারা এলাকার একটি ঝোপের মধ্যে। তারই দেয়া তথ্য মতে পুলিশ সেখান থেকে উদ্ধার করে বস্তাটি।

কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমে শিমুল রাফসানকে টুকরা টুকরা করে। আমরা ৬টা টুকরা পেয়েছি। একইভাবে বাকি দুইটা লাশ বাথরুমে নিয়ে টুকরা টুকরা করে ওই ব্যক্তি।

তিনি বলেন, শিমুল লাশগুলো বাথরুমে নিয়ে টুকরা টুকরা করেন, যাতে সেগুলো বহন করতে সহজ হয় এবং মানুষ এটা নিয়ে সন্দেহ না করে।

এ ঘটনায় নিহত বিথীর বড় বোন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *