মানবিক করিডোর নিয়ে মুখ খুলল বাংলাদেশ সরকার

জাতীয়

‘মানবিক করিডোর’ ইস্যুতে ছড়ানো বিভ্রান্তির জবাব দিল বাংলাদেশ। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্সি যুদ্ধের অংশ হবে না।

সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি)-এ অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, “মানবিক করিডোর বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কারো কোনো চুক্তি হয়নি, এমনকি আনুষ্ঠানিক আলোচনা পর্যন্ত হয়নি।”

ড. খলিল বলেন, জাতিসংঘ মানবিক চ্যানেলের প্রস্তাব দিয়েছে, যেটি করিডোরের মতো নয়। “এই চ্যানেল জাতিসংঘ নিজে পরিচালনা করলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে,”— বলেন তিনি। এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে মাত্র।

তিনি অভিযোগ করেন, “একটি প্রতিবেশী দেশ এই ইস্যুতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছড়াচ্ছে, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের সার্বভৌম অবস্থানকে বিপন্ন করার চেষ্টা কোনোভাবেই সফল হবে না।”

সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা জানান, রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অনেকটাই নিচে নেমে এসেছে। তবে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ ও পুরো অঞ্চল বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

গবেষকরা আরও বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ তরুণ। তাদের দীর্ঘ সময় ধরে অধিকার বঞ্চিত রেখে রাখা বিপজ্জনক। কোনো রকম বিদ্রোহ হলে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মতে, মিয়ানমারে বর্তমান অস্থিরতা ও তিনটি শক্তিশালী পক্ষ — জান্তা সরকার, আরাকান আর্মি এবং ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট — প্রত্যাবাসনের পথে বড় বাধা হয়ে আছে। তিনি বলেন, “যেকোনো টেকসই সমাধানে এ তিন পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে ড. খলিল বলেন, “আমরা মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশটির স্থিতিশীলতা নষ্ট হোক, এমন কিছু বাংলাদেশ চায় না।”

এই সেমিনার থেকে উঠে এসেছে, মানবিক করিডোর নয়, শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চায় বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *