পাট চাষে সঠিক পদ্ধতি
আমদের দেশ বিশ্বের প্রধান পাট উৎপাদনকারী দেশ হলেও ১৯৫১ সালের পূর্বে কোন পাট শিল্প প্রতিষ্ঠা করা হয় নি। অন্য দিকে এই পাটকে কেন্দ্র করে ভারতে, যুক্তরাজ্যে বিশ্বের আরও অনেক দেশে পাট শিল্প গড়ে উঠেছিল। ১৯৫১ সালে বাংলাদেশে প্রথম পাট কল চালু হয়েছে। যার নাম ছিল আদমজী পাট কল।
পাটকে আমাদের দেশে শোনালী আশ বলা হয়। নব্বই এর দশকে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পাট বিদেশে রপ্তানি করা হত। যা তাদের জীবনকে থেকে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব ছিল। পাট আমরা সব সময়ই ব্যবহার করতে পারি। কম বেশি সকল কাজে পাট ব্যবহৃত হয়। পাট বাংলাদেশের প্রধান শিল্প। আমাদের দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় পাঁচ শতাংশ পাট এবং পাটজাত দ্রব্য হতে আসে। এ শিল্পে প্রায় পাঁচ লক্ষিধক কমী এবং ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের এই শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের পাট চাষের সাথে প্রায় পনের লক্ষ লোক নিয়োজিত থেকে তাদের জীবনযাত্রা নির্বাহ করছে। মোটকথা দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, জাতীয় আয় বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাট শিল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে পাট শিল্প গড়ে উঠার পিছনে বিভিন্ন ভৌগলিক কারন রয়েছে। বাংলাদেশে পাট শিল্প সমৃদ্ধ হওয়ার প্রধান কারণ হল আমাদের দেশে উন্নত মানের ও গুনগুন সম্পন্ন পাট উৎপাদিত হয়। এই কারনে আমাদের দেশে পাট শিল্প গড়ে উঠেছিল ।বাংলাদেশের জলবায়ু এবং আদ্রতা পাট শিল্পের জন্য উপযোগী। আমাদের দেশে পাট শিল্প গড়ে উঠার অন্যতম প্রধান কারণ হল সহজ লভ্যতা এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ এর সঠিক ভাবে সরবরাহ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সকল স্থানে পাট উৎপাদিত হয়। নৌপথে অতি সহজে ও অল্প খরচে আনা যায় বলে পাট শিল্প নৌ পরিবহনের সুবিধা জনক স্থানে গড়ে উঠেছে। আবার অন্য দিকে সড়ক পথে ও রেল পথে দেশের সকল এলাকায় রপ্তানি কেন্দ্রের সঠিক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের পাট শিল্প উন্নতি করার জন্য সরকারি অর্থায়ন এবং ব্যক্তিগত উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে মূলধন সরবরাহ করা যায়।
বাংলাদেশে মোট ৭৭টি পাট কল রয়েছে ।যার মধ্যে অধিকাংশই ঢাকার পাশবতী এলাকায় অবস্থিত। পাট শিল্পের জন্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থানে আছে চট্টগ্রাম। আর চট্টগ্রামে মোট বিশটি পাট কল রয়েছে ।চট্টগ্রাম জেলার পাট শিল্প কেন্দ্র গুলো হলো ষোলশহর, সীতাকুন্ড, বারবকুন্ড, ফৌজদারহাট, কেশবপুর এবংকালুরঘাট।বাংলাদেশের তৃতীয় পাট শিল্প গড়ে উঠেছে খুলনা জেলায়। তবে বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলে এই শিল্পের উন্নয়নের ছোয়া তেমনটা পায় নি। বাংলাদেশে উৎপাদিত কাঁচা পাটের বেশির ভাগ কাঁচামাল হিসেবে বিজেএসির পাট কল সমূহে ব্যবহৃত হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের পাট কল গুলো কাঁচা পাট ক্রয় করে পাট চাষিদের ন্যায্য পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করে থাকে। পাট দিয়ে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করা হয়। তাই পাট শিল্পের উন্নতি সাধন করতে হবে।